মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃ বিভাগ ও আন্তঃ অনুষদ মিনিবার ফুটবল প্রতিযোগিতার উদ্বোধন আজকের মেধাবী শিক্ষার্থীদের কেই ভবিষ্যত বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজ করতে হবে। ডাঃ মাহবুবুর রহমান লিটন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সা. উপলক্ষে পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহে প্রান্ত স্পেশালাইজড হসপিটালের ১১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ কর্মসূচির উদ্বোধন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নাটক “মদিনার বিষাদ” ময়মনসিংহের নটরডেম কলেজে বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও শিক্ষা মেলা অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহে মৃত নারীকে ধর্ষণ করেছে লাশ বহনকারী আবু সাঈদ ময়মনসিংহে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট সারাদেশের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন,জন দুভোর্গ

আবেদনের যোগ্যতা না থাকলে ও ১০ বছর ধরে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মেহেদী উল্লাহ

রিপোর্টার নাম :
  • আপডেটের সময়: বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৬৭ সময় দেখুন

আবেদনের যোগ্যতা না থাকলেও ১০ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন া নানা অনিয়ম আর জালিয়াতির অভিযোগের মুখে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক মেহেদী উল্লাহ া যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ১০ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন তিনি। শুধু তাই নয়, নিজের পছন্দের প্রার্থীকে শিক্ষক বানাতে নম্বর টেম্পারিংয়ের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। নানা অভিযোগে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মেহেদী উল্লাহর নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগ :
সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.০০ (৫.০০ স্কেলে) এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ ৩.৫০ (৪.০০ স্কেলে) থাকার শর্ত থাকে।

অভিযোগ উঠেছে, ২০১৫ সালে মেহেদী উল্লাহকে নিয়োগের জন্য বিশেষভাবে সেই শর্ত শিথিল করা হয়। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, বিশেষ যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রার্থীর ফলাফলের যেকোনো একটি শর্ত শিথিল করা হতে পারে।

এই বিশেষ যোগ্যতা হিসেবে দেখানো হয়েছিল—ফোকলোর বিষয়ে স্বীকৃত প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত গ্রন্থ, স্বীকৃত জার্নালে একক নামে প্রকাশিত প্রবন্ধ অথবা জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তি। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, মেহেদী উল্লাহর আবেদনের সময় তার স্নাতকে সিজিপিএ ছিল মাত্র ৩.৩১, যা নিয়োগের শর্ত ৩.৫০ এর চেয়ে কম। বিশেষ যোগ্যতা হিসেবে তিনি যে গ্রন্থ ও পুরস্কারের কথা বলেছিলেন, দুটিই ছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের। তার “ফোকলোরের প্রথম পাঠ” নামের বইটি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির প্রকাশিত ‘লোকসংস্কৃতি’ গ্রন্থ থেকে কপি করা বলে অভিযোগ রয়েছে।

আবেদনকারী আশরাফুল ইসলাম নামের এক চাকরি প্রার্থী লিখিত অভিযোগে জানান, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অনার্সে ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.৫০ থাকার কথা থাকলেও নির্বাচিত প্রার্থীর সিজিপিএ ছিল ৩.৩১। তার পুরস্কার কোনো জাতীয় প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত নয়, বরং একটি কোম্পানি থেকে পাওয়া।

তিনি অভিযোগ করেন, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

নম্বর টেম্পারিং ও অন্য শিক্ষার্থীর নিয়োগে প্রভাব :
শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর মেহেদী উল্লাহর বিরুদ্ধে অন্য আরেকজন শিক্ষককে নিয়োগ দিতে নম্বর টেম্পারিংয়ের অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগ রয়েছে, তার পছন্দের প্রার্থী প্রদিতি রাউত প্রমাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে স্নাতকে সিজিপিএ ৩.৫০ বা তার বেশি পাওয়া শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তরের ফল কম দেখানো হয়েছে। এর ফলে শুধুমাত্র প্রমা এবং আরেকজন শিক্ষার্থী ছাড়া কেউই আবেদন করার সুযোগ পাননি। প্রমা তার প্রথম চার সেমিস্টারের ফল ভালো না হওয়ায়, পরে বিশেষ সুযোগে কয়েকটি কোর্সের পরীক্ষা দিয়ে নম্বর বাড়িয়ে কোনোমতে সিজিপিএ ৩.৫০ করেন।

অভিযোগকারীরা জানান, প্রমার নিয়োগপত্রে সংক্রান্ত কাগজপত্র তৎকালীন উপাচার্য সৌমিত্র শেখরের কক্ষে পাওয়া যায়। সেই সময় মেহেদী উল্লাহ ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক এবং উপাচার্যের আস্থাভাজন ছিলেন।

আন্দোলনে বাধা এবং অন্যান্য অভিযোগ :
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময়ও মেহেদী উল্লাহর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উপর মারমুখী আচরণ করার অভিযোগ ওঠে। ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক হিসেবে তিনি আন্দোলনে বাধা দেন এবং শিক্ষার্থীদের গ্রাফিতি অঙ্কনে বাঁধা দেন। ভিডিও ফুটেজেও এই অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার চাকরি স্থায়ীকরণ স্থগিত করে এবং তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী উল্লাহ তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিজ্ঞপ্তির সম্পূর্ণ শর্ত পূরণ করেই আবেদন করেছি। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হয়ে প্রভাষক স্থায়ী পদে নিয়োগ পাই।’ তিনি তৎকালীন উপাচার্যের পিএস খন্দকার এহসান হাবিব তার ভাই নয় বলেও দাবি করেন। নম্বর টেম্পারিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, স্নাতকোত্তরের দশটি কোর্সের মধ্যে তার একটি কোর্স ছিল।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান জানান, এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি কাজ করছে। রিপোর্ট হাতে পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনুগ্রহ করে এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2025 প্রতিদিন সংবাদ
ESAITBD Sof-Lab UAE/BD